NaziaHQ

Portfollio

Uncategorized

নাসুম ম্যাজিকে শিরোপার লড়াইয়ে মোহামেডান

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় দারুণ এক ম্যাচ জিতে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের শিরোপার লড়াইয়ে টিকে থাকলো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। রোমাঞ্চর এই ম্যাচে শেষ ওভারে জয়ের জন্য মোহামেডানের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। দায়িত্ব নিয়ে অসাধারণ ব্যাটিং করে দলকে জিতিয়ে হিরো বনে গেলেন নাসুম আহমেদ। গতকাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শেষ ওভারে নাসুমের এক চার আর এক ছয়ে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে মোহামেডান। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচ জিতিয়ে মোহামেডানের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখলেন এই অলরাউন্ডার। এই ম্যাচে মোহামেডান হারলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত আবাহনী। এখন প্রতিযোগিতার শিরোপা নির্ধারণ হবে আগামী মঙ্গলবার দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে। লিগে ১৫ ম্যাচে মোট ২৬ পয়েন্ট আবাহনীর। সমান ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট মোহামেডানের। শেষ রাউন্ডে জয়ী দলই করবে শিরোপা উল্লাস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দলে ডাক পাওয়ায় এই ম্যাচে ছন্দে থাকা এনামুল হককে পায়নি গাজী গ্রুপ। অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলকে ভালো শুরু এনে দেন মুনিম শাহরিয়া। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় আরেক ওপেনার সাদিকুর রহমান ১ ছক্কা ও ৩ চারে ২৬ রান করে বিদায় নেন। এরপর দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে টেনে নেন মুনিম। ৬৫ বলে ফিফটি করা ওপেনার ২ ছক্কা ও ১০ চারে খেলেন ৮২ বলে ৮০ রানের ইনিংস। তাহজিবুল ইসলাম ও শেখ পারভেজ ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ত্রিশ পার করে বিদায় নেন দুইজনই। এরপর আর কেউ তেমন কিছু করতে না পারায় ৪৯ ওভার ২ বলে ২৩৬ রানে থামে গাজী গ্রুপ। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও মুস্তাফিজুর রহমান দুজনেই তিনটি করে উইকেট নেন। এছাড়া দুটি উইকেট পান নাবিল সামাদ।
রান তাড়ায় ৪০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় মোহামেডান। আগের দিনের নানা ঘটনায় নিষেধাজ্ঞার শাস্তি এক বছরের জন্য স্থগিত হওয়ায় ম্যাচটি খেলার সুযোগ পান অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয়। শূন্য রানে অল্পের জন্য তিনি বেঁচে যান রান আউট হওয়া থেকে। ৪ রানে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান একবার। দুই দফায় জীবন পাওয়া হৃদয়কে নিয়ে দলকে টানেন রনি তালুকদার। তাদের ৭৫ রানের জুটি ভাঙ্গে ৭ চারে ৫৫ রান করা রনির বিদায়ে। এরপর ৩ চারে ৩৭ রান করে বিদায় নেন হৃদয়। ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে বেঁচে যাওয়া আরিফুল ইসলাম ১ রানে কাটা পড়েন রান আউট হয়ে। এক প্রান্ত ধরে রেখে ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৬২ বলে ৪৯ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ বিদায় নিলে মোহামেডান শিবিরে জেঁকে বসে শঙ্কা। তখন ২২ বলে ৩৩ রান দরকার ছিল দলটির। নাসুম ও সাইফ মিলে ১০ বলে নিতে পারেন ১০ রান। ১২ বলে ২৩ রানের প্রয়োজনে ৪৯তম ওভারে সাইফ চার মারার পর নাসুমের ছক্কায় শেষ ওভারের সমীকরণটা আরেকটু সহজ হয়। এরপর নাসুমের ব্যাটে সেই ঝলক। ২ ছক্কা ও ১ চারে ১৩ বলে অপরাজিত ২১ রান করেন নাসুম। ম্যাচ সেরার পুরস্কার অবশ্য ওঠে সাইফের হাতে। ২ চারে গুরুত্বপূর্ণ ৩০ রান করেন তিনি।
এদিকে, বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে আয়েশি জয় তুলে নেয় আবাহনী। মোসাদ্দেক হোসেনের চমৎকার বোলিংয়ের পর পারভেজ হোসেন ও জিশান আলমের ফিফটিতে ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় তারা। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ২২৫ রান করে রূপগঞ্জ। তাদের সেই রান ৭৫ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় আবাহনী। প্রতিপক্ষকে অল্পতে আটকে জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া মোসাদ্দেক ৪১ রানে নেন ৪ উইকেট। সমান রান খরচায় রকিবুল ধরেন ৩ শিকার। রান তাড়ায় ১ ছক্কা ও ৮ চারে ৭৩ রান করেন পারভেজ। চারটি করে ছক্কা-চারে ৬৩ রান রান আসে জিশানের ব্যাট থেকে। ২২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতে চাপে পড়ে যায় রূপগঞ্জ। তানজিদ হাসানকে এলবিডব্লিউ করা মোসাদ্দেক দুই অঙ্কে যেতে দেননি আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান সৌম্য সরকারকে। ভালো শুরু পাওয়া সাইফ হাসান ২ ছক্কা ও ৩ চারে ২৮ রান করে ফেরেন। পরের ওভারেই আফিফ হোসেনের স্টাম্প ভেঙে দেন মোসাদ্দেক। জমে ওঠা আকবর আলি ও মেহেদি মারুফের ৫০ রানের জুটিতেও ফাটল ধরান মোসাদ্দেক, ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৫ রান করা আকবরকে বোল্ড করে। অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়ে ৮৮ বলে ৪৮ রান করেন মারুফ। এরপর রূপগঞ্জের রান বাড়ে চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শরিফুলের ইসলামের ব্যাটে। ৪টি ছক্কা ও ১ চারে ৪৭ বলে ৪০ রান করেন রিজওয়ান। সমান বাউন্ডারিতে ২৩ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন শরিফুল। রান তাড়ায় শাহরিয়ার কমলের ব্যাটে আগ্রাসী শুরু পায় আবাহনী। তিনটি করে ছক্কা-চারে ২০ বলে ৩২ রান করেন আগের ম্যাচে দুই রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়া ওপেনার শাহরিয়ার কোমল। তার বিদায়ে ভাঙ্গে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরে আরেক ওপেনার পারভেজ সঙ্গে জিশানের ১১৩ রানের জুটিতে জয়ের পথ সহজ হয়ে যায় আবাহনীর। ৬৬ বলে ফিফটি করেন পারভেজ, জিশানের পঞ্চাশ আসে ৬১ বলে। এরপর অবিচ্ছিন্ন ৪৭ রানের যুগলবন্দীতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মোহাম্মদ মিঠুন ও মেহেরব হাসান।

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *